ফলের রাজা আম পাকলে অত্যন্ত সুস্বাদু হয়। গ্রীষ্মকালের প্রচণ্ড গরমে গাছপাকা আম এনে দেয় মিষ্টি ও প্রশান্তিদায়ক স্বাদ। গ্রীষ্মের মৌসুমি ফলগুলোর মধ্যে আমের আবেদন সর্বজনীন। ইতোমধ্যেই বাজারে আম আসতে শুরু করেছে।
তবে বাজারে রাসায়নিকমুক্ত আম পাওয়া কঠিন। বিক্রেতারা অনেক সময় তাদের আমকে রাসায়নিকমুক্ত বলে দাবি করেন, এবং ক্রেতারা তা বিশ্বাস করে কিনে নেন। কিন্তু আমাদের সতর্ক থাকা উচিত, কারণ আমাদের সুস্বাস্থ্য অনেকাংশে নির্ভর করে এই বিষয়ে।
নিচের লক্ষণগুলো দেখে বোঝা যায় কোন আমটি রাসায়নিকমুক্ত এবং ফরমালিনমুক্ত:
১. প্রাকৃতিকভাবে পাকা আমের চেহারা:
কেমিক্যাল মুক্ত আম সাধারণত কাঁচা ও পাকা রঙের মিশ্রণে হয়। গায়ে সাদা বা কালো ছোপ থাকতে পারে। অপরদিকে, কেমিক্যাল দেয়া আম অতিরিক্ত হলুদ, চকচকে ও অস্বাভাবিকভাবে মসৃণ হয়ে থাকে।
২. মাছির উপস্থিতি:
আম কেনার সময় খেয়াল করুন, আমের ওপর মাছি বসছে কি না। ফরমালিন বা কার্বাইড ব্যবহার করা আমে মাছি বসে না।
৩. ত্বকের দাগ:
গাছপাকা আমের ত্বকে প্রাকৃতিক দাগ থাকে। রাসায়নিকে পাকানো আম মসৃণ ও দাগহীন হয়, কারণ সেগুলো কাঁচা অবস্থায় পেড়ে রাসায়নিক দিয়ে পাকানো হয়।
৪. ঘ্রাণ ও স্বাদ:
আম মুখে নিয়ে দেখুন — যদি কোন প্রাকৃতিক ঘ্রাণ না থাকে কিংবা টক-মিষ্টি কোনো স্বাদ না পাওয়া যায়, তাহলে ধরে নিতে হবে যে তাতে ফরমালিনজাত রাসায়নিক ব্যবহার করা হয়েছে।
৫. নির্জন স্থানে ঘ্রাণ পরীক্ষা:
আম কিছুক্ষণ এমন স্থানে রাখুন যেখানে বাতাস চলাচল নেই। গাছপাকা হলে কিছুক্ষণের মধ্যে চারপাশে মিষ্টি গন্ধ ছড়াবে। ওষুধ দেয়া আমে এই ঘ্রাণ থাকবে না।
৬. রঙের পার্থক্য:
গাছপাকা আমের গোড়ার দিকে কিছুটা গাঢ় রঙ থাকে। রাসায়নিক পাকা আম একেবারে সমান হলুদ হয়। হিমসাগরসহ কিছু জাতের আম পাকলেও সবুজ থাকে, এবং গাছপাকা হলে ত্বকে কালো দাগ পড়ে। কেমিক্যাল দিয়ে পাকানো হলে ত্বক মসৃণ ও নিখুঁত হয়।
৭. বোঁটার কাছে ঘ্রাণ:
ফরমালিনমুক্ত আম চেনার সহজ উপায় হচ্ছে নাকে নিয়ে গন্ধ শোঁকা। গাছপাকা হলে বোঁটার কাছে পরিচিত সুগন্ধ থাকবে। কেমিক্যালযুক্ত আমে এই গন্ধ নেই বা থাকলেও ঝাঁঝালো/বিরক্তিকর হয়।
৮. খাওয়ার আগে প্রস্তুতি:
বাজার থেকে আম কিনে আনার পর অন্তত ১৫ মিনিট পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। এরপর ভালোভাবে ধুয়ে খোসা ছাড়িয়ে এই পুষ্টিকর মৌসুমি ফলটি উপভোগ করুন।